নাটক-“বাটি চচ্চড়ি”

“বাটি চচ্চড়ি”
– সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়

 

 

চরিত্র লিপি:
* গোবিন্দ নস্কর
* অলোক
* শ্রাবনী

[ একটি সাধারন ঘর। আসবাব আরও সাধারণ। কটি চেয়ার, একটি টেবিল, একটি চৌকি, পাশে আর একটি টেবিলে একটি স্টোভ, কিছু বাসন ও কটি কৌটো। আলো জ্বলে, নেপথ‍্যে শোনা যায়] নেপথ‍্যে—ঘরটি শ্রীযুক্ত গোবিন্দ নস্করের। ব‍্যাক্তিটি আসপাশের সাত দশটি গ্রামে কৃপণ হিসাবে যথেষ্ঠ সুনাম অর্জন করেছেন। আজীবন অকৃতদার থেকে অর্থ নামক দেবীকে ব্যয় না করে কেবলমাত্র সঞ্চয় করার ব্রতে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। পাছে কেউ তাঁর বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে তাঁর অন্ন ধ্বংস করে, সেই ভয়ে তিনি কোনো আত্মীয়ের সাথে যোগাযোগ রাখেন না। বন্ধু বান্ধব বাড়িতে এলে চা খাওয়ানোর রেওয়াজ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন‍্য বন্ধুত্বের পাপচক্র থেকে নিজেকে শত হস্ত দূরে রাখেন। এ হেন ব‍্যাক্তির বাড়িতে এক রাতে দুই অতিথির আগমন ঘটলো। (বাইরে ঝড় বৃষ্টির আওয়াজ, তার মধ‍্যে দরজায় করাঘাত। ভিতর থেকে বেড়িয়ে আসেন গোবিন্দ নস্কর।)
গোবিন্দ– কেউ কি দরজায় কড়া নাড়লো, নাকি ঝড়ে আওয়াজ হচ্ছে? (আবার কড়াঘাত) নাহ্, এতো কড়া নাড়ারই আওয়াজ। বোঝো! এই ঝড় বৃষ্টির মধ‍্যে এত রাতে আবার কে এলো? নিশ্চই ব‍্যাটা হারু মুদি। সকালে দোকান আনতে গিয়ে দু-টাকা বাকি রেখে এসেছিলাম সেইটা চাইতে এসেছে। বলিহারী হিসেবি লোক বটে। কেন রে ব‍্যাটা আমি কি তোর দুটাকা মেরে দেব? এই ঝড়বৃষ্টির মধ‍্যেই ওই দুটো টাকার জন‍্য লোকের বাড়িতে হানা দিতে হবে! তোর কী প্রাণের ভয়ও নেই, ব‍্যাটা চামার? (ঘন ঘন করাঘাত) ওঃ দরজাটা যেন ভেঙেই ফেলবে। দেবো না, আজ তোর দুটাকা আমি দেবো না। যতই তুই ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে আয়, কাল যখন দেবো বলেছি তখন কালই দেবো, আজ নয়। (দরজা খুলে চমকে ওঠে) কে!(প্রবেশ করে দুই যুবক যুবতী। বেশ ধোপদুরস্ত মাথা থেকে জল টপকাচ্ছে।) কাকে চাই?
অলোক– আজ্ঞে আমার নাম অলোক মুখার্জ্জী আর এ আমার স্ত্রী শ্রাবনী।
গোবিন্দ– সে তো বুঝলাম, কিন্তু এখানে কি চাই?
অলোক– আজ্ঞে আশ্রয়।
গোবিন্দ– আশ্রয়! মানে?
অলোক- দেখুন না আমরা যাচ্ছিলাম মহেশপুর, আমার দিদির বাড়ি।
গোবিন্দ– হ‍্যাঁ আরো কুড়ি কিলোমিটার, তো?
অলোক– বেড়োতে একটু দেরিই হয়ে গেল, তারপর নামলো এই ঝড়বৃষ্টি, আর তার মধ‍্যে বলা নেই কওয়া নেই…ঠিক আপনার বাড়ির সামনেই দেহ রখলো।
গোবিন্দ– (চমকে) অ‍্যাঁ দেহ রেখেছে! কে?
অলোক– আমার গাড়িটা।
গোবিন্দ– ও, তারপর।
অলোক– আশেপাশে কোন গ‍্যারেজও নেই যে এই ঝড়বৃষ্টির মধ‍্যে সারিয়ে নেব, তাই বলছিলাম কি…
গোবিন্দ– হবে না—
অলোক– অ‍্যাঁ!
গোবিন্দ– এখানে রাতের আশ্রয় হবেনা।আপনারা আসুন।
অলোক– কাকাবাবু, কাকাবাবু-
গোবিন্দ– কোন কাকাবাবু নয়, হবে না তো হবে না।
অলোক– কাকাবাবু দেখুন আমি আপনার ছেলের মতো।
গোবিন্দ– আমার ছেলে নেই।
শ্রাবনী– কাকাবাবু, তাহলে আমি নিশ্চয়ই আপনার মেয়ের মতো।
গোবিন্দ– আমার মেয়েও নেই।
অলোক– ও, মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে আর ছেলে বাইরে থাকে।
গোবিন্দ– না-আমার ছেলে মেয়ে নেই।
শ্রাবনী– তারমানে কাকীমা..আহারে।
গোবিন্দ– কাকিমাও নেই।
অলোক– ইস্,তার মানে কাকীমা অনেক দিনই চলে গেছেন।
গোবিন্দ– কাকীমা এ বাড়িতে কোনোদিন আসেই নি।
অলোক– অ‍্যাঁ,বিয়ের রাতেই ডিভোর্স!
গোবিন্দ– দুর, আমি বিয়েই করিনি।
অলোক– অ‍্যাঁ!
গোবিন্দ– হলো তো? এবার আসুন।
শ্রাবনী– (কাঁদো কাঁদো) ওরকম বলবেন না কাকাবাবু, আমি যুবতী নারী, এই ঝড় বৃষ্টির রাতে বাঘে খাবে কি ঘোগে ছোঁবে তার কী কোনো ঠিক আছে বলুন? একটু দয়া করুন কাকাবাবু, কথা দিচ্ছি ভোরের আলো ফুটলেই চলে যাব। অন্তত আমার মুখ চেয়ে একটু দয়া করুন। আপনার পায়ে ধরছি।
গোবিন্দ– আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে থাকো। তবে একটা কথা, শোবার জন‍্য বিছানা দিতে পারবো না। এই চেয়ারে বসেই রাত কাটাতে হবে।
শ্রাবনী– না না, বিছানা বালিশ কিছু চাই না, দু’টো চেয়ার হলেই হবে, কঘন্টার তো ব‍্যাপার। (বসতে যায়।)
গোবিন্দ– দাঁড়াও, চেয়ারের আসনটা সরিয়ে নিই, তোমাদের জামা কাপড়ে জল কাদা লেগে আছে, ওগুলো নোংরা হবে, কাচতে গেলে সাবান খরচা হবে। (ঢাকা সরিয়ে নেয়।) হ‍্যাঁ, এইবার বসো।
অলোক– আপনাকে যে কী বলে ধন‍্যবাদ দেবো কাকাবাবু?
গোবিন্দ– ধন‍্যবাদ দিতে হবেনা। ভোর হলেই চলে যেও।
অলোক– কাকাবাবু বলছিলাম, বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডায় হাত পাগুলো জমে গেছে, যদি একটু..
গোবিন্দ– পাবে না।
অলোক– অ‍্যাঁ!
গোবিন্দ– চা পাবে না, আমি চা খাই না।
অলোক– ও—-
গোবিন্দ– হ‍্যাঁ। আর একটা কথা, রাতের খাবার কিছু আশা কোরো না,কেন না আমার ঘরে কিছু নেই। রাতে আমি উপোষ করি, আর দিনে পাঁচ টাকার মুড়ি রোজ দোকান থেকে কিনে এনে খাই।
অলোক– বুঝলাম, তা কাকাবাবু, একটু জল পেতে পারি, না কি সেও রাস্তার কলে?
গোবিন্দ– না, জল পাবে, যদিও জল আমাকেই রাস্তার কল থেকে বয়ে আনতে হয়, কেন না আমার কোনো কাজের লোক নেই। বসো দিচ্ছি। (প্রস্থান।)
অলোক– ব‍্যাটা, মহা কঞ্জুস তো!
শ্রাবনী– হুঁ, না হলে বিপদে পড়ে বাড়িতে আসা অতিথিকে কেউ এভাবে বলতে পারে!
অলোক– অথচ দেখ, ঘরের কোনে স্টোভ, হাঁড়ি কড়া, সব রয়েছে।
শ্রাবনী– হ‍্যাঁ, আর কৌটো গুলো দেখছো না? ওগুলোতে নিশ্চয় চাল, ডাল আছে।
অলোক– হুঁ তাইতো মনে হচ্ছে। দাঁড়াও দেখতে হবে। (জলের গ্লাস হাতে গোবিন্দর প্রবেশ।)
গোবিন্দ– এই নাও জল।
অলোক– বাঁচালেন কাকাবাবু, গলাটা একেবারে শুকিয়ে গেছিল।
শ্রাবনী– কাকাবাবু, আমিও একটু জল খাবো।
গোবিন্দ– হ‍্যাঁ দিচ্ছি।(গোবিন্দ বেড়িয়ে যায় অলোক চট করে উঠে গিয়ে কৌটোগুলো খুলে দেখে আবার এসে বসে।)
অলোক– সব আছে। চাল,ডাল, তেল, নুন, মশলা সব। হাড় খোসটে বুড়ো খেতে দেবে না বলে মিথ‍্যে বলছে। দাঁড়াও ওর মজা দেখাচ্ছি। (গোবিন্দর প্রবেশ।)
শ্রাবনী– (জল খেয়ে)আঃ! জল খেয়ে শান্তি হলো। আসলে সেই দুপুরে খেয়ে বেড়িয়েছি তো, পেটে যেন ছুঁচোয় ডন মারছে, কি আর করা যাবে, জল দিয়েই পেটের ছুঁচো ঠান্ডা করি।
অলোক– শ্রাবনী, কাকাবাবু কে সেইটা দেখাবো?
শ্রাবনী– কোনটা?
অলোক– সেই যে কেদার যাওয়ার পথে।
শ্রাবনী– কেদার! (অলোক ইশারা করে) ও হ‍্যাঁ কেদার। কেদার বুঝলেন কাকাবাবু।
গোবিন্দ– কি কেদার?
অলোক– রাতের খাবার..
গোবিন্দ– বললাম তো কিছুই নেই, রাতের খাবার হবে না।
আলোক– কিচ্ছু লাগবে না। সে এক গল্প কাকাবাবু, আমি আর শ্রাবনী কেদার যাচ্ছি।(ইশারা করে।)
শ্রাবনী– হ্যাঁ, কেদার।
অলোক– পথে তুষার ঝড়ে আটকে পড়লাম এক গুহায়।
শ্রাবনী– (নাটকীয় ভাবে) গুহার মধ‍্যে বাঘ।
অলোক– ছিল না।
শ্রাবনী– অ‍্যাঁ! হ‍্যাঁ ছিলনা, বাঘ ছিল না।
অলোক– ছিলেন এক সাধুবাবা।
গোবিন্দ– সাধুবাবা!
অলোক– তো সেই সাধুবাবা, রাতে আমাদের বাটি চচ্চড়ি করে খাওয়ালেন।
শ্রাবনী– বাটি চচ্চড়ি! বাটি চচ্চড়ি।
গোবিন্দ– সাধুবাবা বাটি চচ্চড়ি করে খাওয়ালেন!
অলোক– হ‍্যাঁ কাকাবাবু, তবে আর বলছি কি। কি তার অপূর্ব স্বাদ, এখনো জিভে লেগে আছে।
গোবিন্দ– তা তোমরা কি আশা করছো আমি তোমাদের বাটি চচ্চড়ি রেঁধে খাওয়াবো?
অলোক– হ‍্যাঁ- মানে না, আপনি রাঁধবেন কেন? আমি রাঁধবো।
গোবিন্দ– ইয়ার্কি করছো? বললাম ঘরে কিছু নেই শুনতে পাওনি!
অলোক– কিচ্ছু লাগবে না তো।
গোবিন্দ– মানে!
অলোক– কিচ্ছু লাগবে না। তবে আর বলছি কী? এ হলো হিমালয়ের সাধুবাবার বাটি চচ্চড়ি। কিচ্ছু লাগবে না, শুধু একটা কড়া, একটু জল, একটা বাটি, একটু আগুন, আর একটা মন্ত্র।
গোবিন্দ– মন্ত্র!
অলোক– হ‍্যাঁ মন্ত্র। ওই মন্ত্রটাই তো আসল ওই মন্ত্রের জোরেই তো বাটি থেকে বাটি চচ্চড়ি হলো, আর আমরা দু’জন পেট ভরে খেলাম। বলো শ্রাবনী?
শ্রাবনী– হ্যাঁ, খেলাম।
অলোক– আর পরদিন সকালে আসার সময় সাধুবাবা মন্ত্রটা আমায় শিখিয়ে দিলেন।
গোবিন্দ– বলো কি কিছু না দিয়ে বাটি চচ্চড়ি!
অলোক– শুধু বাটি, কড়া, আগুন, জল।
গোবিন্দ– আর মন্ত্র?
অলোক– হ্যাঁ, মন্ত্র-
গোবিন্দ– তুমি জানো মন্ত্রটা?
অলোক– জানি তো, সাধুবাবা শিখিয়ে ছিলেন।
গোবিন্দ– তার মানে তুমি এখন রাঁধতে পারবে ওই বাটি ছাড়া, মানে কিছু ছাড়া-
অলোক– বাটি দিয়ে বাটি চচ্চড়ি।
গোবিন্দ– আমি বিশ্বাস করি না।
অলোক– অবিশ্বাস করবেন না কাকাবাবু, হিমালয়ের সাধুবাবা।
গোবিন্দ– বেশ তবে রেঁধে দেখাও দেখি জল ছাড়া,
অলোক– বাটি দিয়ে বাটি চচ্চড়ি।
গোবিন্দ– হ‍্যাঁ বাটি চচ্চড়ি। ওখানে স্টোভ, কড়া, বাটি সব আছে জল আমি দিচ্ছি।(যেতে গিয়ে স্বগত) এটা যদি সত‍্যি হয়! তাহলে মন্ত্রটা শিখে নিতে হবে, বাকি জীবন খাওয়া খরচাটাও বেঁচে যাবে। (প্রস্থান।)
শ্রবনী– কি করলে গো! তুমি তো ফেঁসে যাবে!
অলোক- কিচ্ছু ফাঁসবো না, দেখোই না মজাটা। (গোবিন্দর প্রবেশ)
গোবিন্দ– এই নাও জল। দেখি তোমার কেরামতি।
অলোক– এখুনি দেখাচ্ছি কাকাবাবু।(অলোক উঠে গিয়ে স্টোভ জ্বেলে কড়া বসিয়ে তার মধ‍্যে জল আর বাটি দিয়ে খুব নাড়তে থাকে। গোবিন্দ অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।)
শ্রাবনী– কাকাবাবু..
গোবিন্দ– আঃ চুপ করো,
শ্রাবনী– আপনার নামটাই তো জানা হয়নি ককাবাবু।
গোবিন্দ– গোবিন্দ নস্কর।
শ্রাবনী– এই বাড়ি…
গোবিন্দ– আমার ঠাকুর্দা তৈরী করেছিলেন একশ বছর আগে। (অলোক কড়ায় খুন্তি দিয়ে খুব নাড়ছে আর মাঝে মাঝে চামচে করে চেখে আঃ-বলছে।)
শ্রাবনী– না বলছিলাম এই বাড়িতে আপনি একা থাকেন?
গোবিন্দ– একা, আমার বাবা নেই, মা নেই, ভাই নেই, বোন নেই, বৌ নেই, ছেলে নেই, মেয়ে নেই কেউ নেই, আমি একা।
অলোক– (স্বগত) আর টাকা..
গোবিন্দ– অ‍্যাঁ কিছু বললে?
অলোক– না বলছিলাম এর স্বাদটা যা হয়েছে না.. শুধু যদি দু’ ফোঁটা ঘি পরতো তাহলে আর দেখতে হতো না….সাধুবাবাও দিয়েছিলেন আর কি।
গোবিন্দ– হ‍্যাঁ হ‍্যাঁ ঘি বোধহয় একটু হতে পারে। (ঘি দেয়। অলোক ঘি দিয়ে নাড়তে থাকে আর আহা আহা করতে থাকে।)
শ্রাবনী– কাকাবাবু আপনি রাঁধতে জানেন?
গোবিন্দ– হ‍্যাঁ ওই পারি এক রকম।
অলোক– (স্বগত) কিপটে লোকের আবার রান্না..
গোবিন্দ– কিছু বললে?
অলোক– বলছিলাম রান্নাটা এতো সুন্দর হয়েছে, সাধুবাবার থেকেও ভালো, শুধু যদি একমুঠো চাল পড়তো এতে। সাধুবাবাও দিয়েছিলেন আর কি।
গোবিন্দ– দাঁড়াও দাঁড়াও চাল বোধহয় একটু আছে, (চাল দেয় অলোক কড়ায় চাল দিয়ে নাড়তে থাকে, আর চেখে আহা আহা করতে থাকে।)
শ্রাবনী– কাকাবাবু আপনি সংসার করেন নি কেন?
গোবিন্দ– ওই হয়ে ওঠেনি আর কি–
অলোক– (স্বগত) অন‍্য কেউ ওনার অন‍্য ধ্বংস করবে সেটা কি কিপটে বুড়োর সহ‍্য হতো?
গোবিন্দ– কিছু বললে?
অলোক– না বলছিলাম রান্নাটা যা হয়েছে পরমান্নও হার মেনে যাবে, শুধু নামাবার আগে একটু ডাল আর এক চিমটে নুন দেওয়া গেলে পুরো রাজকীয় হয়ে যেত।
গোবিন্দ– আছে আছে, ডাল, নুন দুই আছে। (ডাল নুন দেয় অলোক যথারীতি নাড়তে থাকে আর আহা আহাহা করতে থাকে। একটু বাদে তিনটি থালায় খিচুড়ি এনে পরিবেশন করে।)
অলোক– নিন কাকাবাবু খান, সাধুবাবার বাটিচচ্চড়ি। শ্রাবনী তুমি খেয়ে বলো দেখি সাধুবাবার মতো হলো কিনা।
গোবিন্দ– (খেয়ে) অসাধারণ,আমি তো ভাবতেই পারিনি যে শুধু বাটি দিয়ে এতসুন্দর বাটিচচ্চড়ি রাঁধা যায়। বাবা অলোক আমার একটা উপকার করতে হবে।
অলোক– বলুন কাকাবাবু?
গোবিন্দ– দেখো বাবা তোমাদের আমি ঝড়ের রাতে আশ্রয় দিলাম বলে বলছি না, মানে তুমি যদি খুশি হয়ে ওই বাটি চচ্চড়ির মন্ত্রটা আমায় শিখিয়ে দাও বাবা।
অলোক– নিশ্চয় কাকাবাবু কেন দেব না? আপনি আমাদের এতবড় উপকার করলেন আর আপনার জন‍্য এটুকু করবো না?
গোবিন্দ– বাঁচালে বাবা—(অলোক খেতে খেতে এগিয়ে যায়)
অলোক– (স্বগত) মন্ত্র শিখে কি আর পয়সা বাঁচবে কাকাবাবু? মন্ত্রটা যে খুব সহজ কাকাবাবু, ইলি গিলি হোকাস ফোকাস বাটিচচ্চড়ি, কিপটে বুড়ো বুঝলো না তার খসলো কতো কড়ি। (আলো নেভে)
(সমাপ্ত)

Loading

One thought on “নাটক-“বাটি চচ্চড়ি”

Leave A Comment